
একই বিষয়ে বারবার রিট আবেদন করে স্থিতাবস্থা নিয়ে ইটভাটা পরিচালনাকারী পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫৪ ভাটা মালিককে চার লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর বেঞ্চ এই রায় দেয়।
রিট আবেদনকারী সংগঠন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি এর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এই ৫৪ ইটভাটা মালিকের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কবির, শামীমা আক্তার, গিয়াস উদ্দিন, এনামুল হক, নাসির উল আলম, মোহাম্মদ ইসলাম, বিপ্লব কান্তি ও আব্দুল কাদের।
মনজিল মোরসেদের সাংবাদিকদের বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ধ্বংস করে লাইসেন্স ছাড়া অনেক ইটভাটা চালু থাকার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর এলে এইচআরপিবি জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করে। আদালত শুনানি শেষে রুল জারি করে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেয়।
“আদালতের আদেশ কার্যকর করতে গেলে ইটভাটা মালিকগণ অন্য একটি রিট আবেদন করেন এবং স্থিতাবস্থার আদেশ পান। তাদের সে রিট আদেশে এইচআরপিবি পক্ষভুক্ত হয় এবং শুনানি শেষে আদালত সে রুল ডিসচার্জ করে।”
মনজিল মোরসেদ বলেন, সে রায়ের বিরুদ্ধে ইটভাটা মালিকগণ আপিল করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ৪ জুন রায় দেয় এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের আবেদন নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয়। তবে আপিল বিভাগ কোনো স্থগিতাদেশ বা স্থিতাবস্থা দেয়নি।
“এর কয়েক মাস পরে ইটভাটা মালিকগণ অপর একটি রিট আবেদন দায়ের করে স্থিতাবস্থার আদেশ নেন এবং সে আদেশ ছয় মাসের জন্য বর্ধিত করা হয়।”
বিষয়টি জানার পরে এইচআরপিবি এর প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতকে অবহিত করেন এবং কতিপয় ইটভাটা মালিক একই বিষয়ের উপরে বারবার রিট আবেদন করে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন বলে তুলে ধরেন।
এসব ইটভাটা মালিকরা ইতোপূর্বে আদালতের আদেশ জালিয়াতি করেছেন এবং এই আদালত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে বলেও তুলে ধরেন তিনি।
মনজিল মোরসেদ বলেন, যে রিট আবেদনে স্থিতাবস্থা ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছিল এদিন বিচারপতি ফাতেমা নজিব এবং বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর আদালতে তার শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত ছয় মাসের বর্ধিত স্থিতাবস্থার আদেশ প্রত্যাহার করে এবং রুল খারিজ (ডিসচার্জ) করে রায় দেয়।
“আদালত সার্বিক বিবেচনায় রিট পিটিশনারদের সার্বিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে একই বিষয়ে বারবার অবৈধ ইটভাটা পরিচালনায় জড়িত থাকায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫৪টি ইটভাটার মালিকের প্রত্যেককে চার লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয় এবং আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত টাকা হাই কোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
পাঠকের মতামত